নিউস ভয়েস অফ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ এখন আর আশঙ্কা নয়, বরং এক নির্মম বাস্তবতা। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে—ক্ষুধা ও অপুষ্টি এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে, প্রতিদিন নতুন করে মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। এরই মধ্যে অনাহারে আরও ১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে শিশু ও নারীরা।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক উপপ্রধান জয়েস মুসুইয়া জানিয়েছেন, উত্তর ও মধ্য গাজা, বিশেষ করে গাজা সিটিতে দুর্ভিক্ষ ইতোমধ্যেই নিশ্চিত হয়েছে। তাঁর আশঙ্কা, সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দক্ষিণ গাজার দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসেও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।
গাজার স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে জানা যায়, অনাহার ও অপুষ্টিতে প্রতিদিনই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে একাধিক পরিবার পুরোপুরি খাবারবিহীন অবস্থায় দিন কাটিয়েছে। শিশুরা কান্না করে কেবল পানির খোঁজ করছে, অথচ নিরাপদ পানি পর্যন্ত নেই।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠন অবিলম্বে গাজায় পূর্ণমাত্রায় মানবিক করিডোর খোলার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও নিরাপত্তাজনিত অজুহাতে ইসরায়েল সীমান্ত শিথিল করছে না। এতে গাজার ২৩ লাখ মানুষের জীবন এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্ভিক্ষ শুধু খাদ্যের ঘাটতির কারণে নয়, বরং অবরোধ ও সহায়তা বন্ধের কারণে কৃত্রিমভাবে তৈরি হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধবিধির সরাসরি লঙ্ঘন। পর্যাপ্ত চিকিৎসা না থাকায় অপুষ্ট শিশুদের অনেকেই নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও সংক্রমণে মারা যাচ্ছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, এখনই যদি অবরোধ প্রত্যাহার ও ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিত না করা যায়, তবে গাজায় ভয়াবহ মৃত্যুযাত্রা শুরু হবে। ইতিহাসের সবচেয়ে করুণ মানবিক বিপর্যয়ের সাক্ষী হবে বিশ্ব।