Newsvob.com.: অনলাইন ডেস্ক : উপস্থাপক হিসেবেও নজর কেড়েছিলেন। নিজেকে সেনা পরিবারের সদস্য দাবি করলেও এই পরিবারের সঙ্গেই নিজের গাঁটছড়া বাঁধতেই অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ সময়।
ফার্জানা ব্রাউনিয়া স্বামী হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর সঙ্গে ছাদনাতলা ভাগাভাগি করেছেন।
বিবাহ বহির্ভূতভাবেই নিজেরা ‘লিভ টুগেদার’ করেছেন চুটিয়ে প্রকাশ্যেই। এ বিষয়ে প্রশ্ন উঠলে ‘লিভ টুগেদার’ জায়েজ করতেও মনগড়া যুক্তি মেলে ধরেন।
সেনা নিয়ম কানুনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বারবার সেনাবাহিনীকে বিব্রতকর ও অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি করার নৈতিক স্খলনের দায়ে দেশের সব সেনানিবাস ও সেনানিবাসের আওতাভুক্ত এলাকায় পিএনজি বা অবাঞ্ছিত হয়েছেন তাঁর সেই স্বামী।
২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল তাঁর বিরুদ্ধে সেনা সদর দপ্তর এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও সেই সময় টু শব্দটি করেননি ধুরন্ধর ও করিৎকর্মা স্বামী-স্ত্রীর কেউই।
স্বামী সারওয়ার্দীর মতোই ‘তথ্য গোপন’ করে প্রপাগান্ডা ছড়ানোকেই হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।
গোয়েবলসীয় কায়দায় সরকার ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে ঢালাও মিথ্যাচারের পর আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) দেশবাসীর কাছে ‘নারীখেকো’ চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর ‘অবাঞ্ছিত’ হওয়ার বিষয়টিকেই উপস্থাপন করে। পিএনজি’র চিঠির আদলেই নিজেদের ভাষ্য গণমাধ্যমে উপস্থাপন করেছে তারা। আর এতেই যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছেন বহুরূপী ব্রাউনিয়া। স্বামীর মতোই স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের প্ল্যাটফর্মকেই বেছে নিয়ে চরম ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেছেন।
তবে বিয়ের পর বিয়েতে হারানো গ্ল্যামার এবং দীর্ঘদিন মিডিয়ায় অনুপস্থিত হওয়ায় রাতারাতি দৃশ্যপটে নিজেকে ফোকাস করে সুকৌশলী গলাবাজির মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের পলাতক ও দন্ডিত এক নেতার পুরনো ‘আস্থা’ ফিরে পাওয়ার মাধ্যমে ক্ষমতার পালাবদলের খোয়াব দেখছেন কীনা এসব বিষয়ও খতিয়ে দেখার জোর দাবি উঠেছে।
জানা যায়, একাধিক বিয়ে, বহু নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কসহ নানাবিধ কারণে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে সেনানিবাস ও সেনানিবাস আওতাভুক্ত এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
ফলশ্রুতিতে সেনানিবাস ও সেনানিবাসের আওতাভুক্ত সব স্থাপনা এবং সিএমএইচে চিকিৎসা সেবা, অফিসার্স ক্লাব, সিএসডি শপ ইত্যাদিতেও তাঁর প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সূত্র মতে, সেনা কর্তৃপক্ষ সাধারণত কাউকে পিএনজি বা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলে তাকে চিঠি দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীও চিঠি পেয়েছেন। একই সঙ্গে এ চিঠি দেশের প্রতিটি সেনানিবাসেই পাঠানো হয়েছে।
কিন্তু রহস্যজনক কারণে নিষিদ্ধ হওয়ার এক বছর তিন মাস পর মিথ্যার তুবড়ি ছুটাতে শুরু করেছেন সারওয়ার্দী ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ফারজানা ব্রাউনিয়া।
বিশেষ করে ব্রাউনিয়া আইএসপিআর’র বক্তব্য নিয়ে কটুক্তি করে ব্যাখ্যা চেয়ে বিবৃতির পাশাপাশি কথিত অনলাইন টকশোতেও ‘জ্ঞানতাপস’ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে গিয়ে মিথ্যার খই ফুটিয়েছেন নিজের মুখে।
সারওয়ার্দী ও ব্রাউনিয়ার কুৎসাচারের বিষয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে দেশপ্রেমিক একাধিক সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, ‘পিএনজি’র তথ্য গোপন করেই ধুরন্ধর মানসিকতার স্বামী-স্ত্রী ফায়দা লুটতে চেয়েছিলেন।
তারা নিজেদের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ওই সময়ে জানলেও কোন প্রতিবাদ করেননি। তার মানে ডাল মে কুচ হালা হায়।’
সূত্র জানায়, পিএনজি’র চিঠির ভাষার সঙ্গে আইএসপিআর’র চিঠির ভাষার কোন পার্থক্য নেই। আইএসপিআর’র নিজস্ব কোন ভাষা গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়নি।
কিন্তু আইএসপিআর তাঁর স্বামীর বাহিনীর শৃঙ্খলা পরিপন্থী নানা কান্ড কীর্তি জনসম্মুখে আনায় প্রতিশোধ পরায়ণ মানসিকতারই বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছেন নানা ঘাটে বাঁক নেওয়া ব্রাউনিয়া।
আইএসপিআর’র প্রেস নোটে ব্যবহৃত ‘বিতর্কিত’ শব্দটি নিয়েও প্রশ্ন তুলেন উপস্থাপক ফারজানা ব্রাউনিয়া। বিএনপি-জামায়াতের গুজব সেলের অন্যতম হোতা খলিলের অনুরোধে নিজের গুণকীর্তন শুরু করেন ব্রাউনিয়া।
নোবেলজয়ী মানবতা কর্মী মাদার তেরেসা বা ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের মতোন মহিয়সী নারীদের কাতারেই হয়তো নিজেকে ভাবতে শুরু করেছেন। নিজের সুনামের কথাই জাহির করেছেন। দুর্নামের রসালো গল্প ‘থোড়াই কেয়ার’ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে একটি সূত্র জানা যায় ‘বহু বিয়ের পিড়িতে বসে আরেকজন নারীর সুখের সংসার বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই লোভের চোরাবালিতে হারিয়ে তছনছ করে দেওয়া নারীকে আর যাই হোক ‘মহিয়সী’ উপাধিতে বরণ করা যাবে না। তাকে ‘বিতর্কিতই’ বলতে হবে।
নাম না উচ্চারণ করে তাঁর সম্পর্কে নৈর্ব্যক্তিক এই মূল্যায়নই যথোপযুক্ত। কিন্তু তিনিই নারীদের জন্য অবমাননার ক্ষেত্র প্রস্তুতে ফন্দি-ফিকির আঁটছেন।
সহিংস কোন বক্তব্য আইএসপিআর প্রকাশ না করলেও জোর জবরদস্তির মাধ্যমেই তিনি তিন বাহিনীর এ মুখপাত্র সংস্থাটিকে হীন পন্থায় ঘায়েল করার অপকৌশল গ্রহণ করেছেন।’
এমনটি উল্লেখ করেই উর্ধ্বতন একাধিক সাবেক সেনা কর্মকর্তা কালের আলোকে বলেন, ‘সেনাবাহিনীতে এলপিআর’র পিরিয়ড চাকরি চলাকালীন সময় হিসেবেই ধরা হয়। কেউ ২৬ বছরের আগে প্রথম বিয়ে করতে চাইলে সেনাবাহিনীর অনুমতি নিতে হয়।
এছাড়া ২৬ বছরের পর বিয়ে করলে কোন অনুমতির প্রয়োজন পড়ে না। এসব নিয়ম কানুনের কথা হয়তো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কারণেই ভুলে গেছেন বা না জানার ভান করছেন তারা।’
এসব কর্মকর্তারা আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনীতে সুস্পষ্টভাবে কঠোর নিয়ম রয়েছে প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে এবং দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে সেনা সদর থেকে লিখিতভাবে অনুমতি বাধ্যতামূলক। তিনি কোনটিরই লিখিত অনুমতি নেননি। এটা সম্পূর্ণভাবে সেনা শৃঙ্খলার পরিপন্থী।