নিউস ভয়েস অফ বাংলাদেশ : স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর বাংলাদেশের অবস্থান এখন একটি সম্ভাবনাময় দ্বন্দ্বের মোহনায়। একদিকে বিস্ময়কর প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও তরুণ প্রজন্মের শক্তিময় উপস্থিতি; অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ হুমকি। এই তিনটি বিষয়—তরুণ, প্রযুক্তি ও পরিবেশ—বর্তমান বাংলাদেশ নির্মাণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ এখন তরুণ। তাদের সৃজনশীলতা, কর্মস্পৃহা ও নতুন চিন্তাভাবনা দেশের আর্থসামাজিক কাঠামোয় প্রাণ সঞ্চার করতে পারে।
কিন্তু এই শক্তিকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর না করতে পারলে তা বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। আমাদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাকে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে, যেন তরুণরা শুধু চাকরি খোঁজার বদলে উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।
প্রযুক্তির দিক থেকেও বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ই-গভর্ন্যান্স, স্মার্ট কৃষি, ফিনটেক, ই-লার্নিং ইত্যাদিতে ইতিমধ্যেই অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু প্রযুক্তির এই ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সঙ্গে সাইবার নিরাপত্তা, ডিজিটাল বিভাজন ও গোপনীয়তা রক্ষা—এই চ্যালেঞ্জগুলোও সামনে এসেছে। ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ও নৈতিক প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত না করা গেলে অগ্রগতি হবে অসম।
অন্যদিকে, জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের জন্য কেবল ভবিষ্যতের হুমকি নয়, বরং চলমান বাস্তবতা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, উপকূলীয় এলাকার ক্ষয়প্রাপ্তি ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার, পরিবেশবান্ধব নগরায়ণ এবং জলবায়ু-সচেতন নীতিনির্ধারণ এখন সময়ের দাবি।
বাংলাদেশকে যদি সত্যিকার অর্থে একটি স্মার্ট, সবুজ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হয়, তবে এই তিনটি খাত—তরুণ, প্রযুক্তি ও পরিবেশ—হোক আমাদের জাতীয় নীতির তিনটি স্তম্ভ। এই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই গড়ে উঠতে পারে আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ।