1. rajubdnews@gmail.com : admin :
  2. newsvob57@gmail.com : News VOB : News VOB
মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বড় ক্ষতি এড়াতে জনবিরল এলাকায় বিমানটি নেওয়ার চেষ্টা করেন বৈমানিক তৌকির: আইএসপিআর উত্তরায় স্কুল ভবনে বিমান বিধ্বস্ত, মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক, পতাকা অর্ধনমিত রাখার ঘোষণা সেন্টমার্টিন রক্ষায় টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে : পরিবেশ উপদেষ্টা জুলাই অভ্যুত্থানের সাহসী নারীদের ইতিহাস থেকে হারিয়ে যেতে দেবো না: শারমীন মুরশিদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অপরাধীদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে: মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপি কমিশনার মানিলন্ডারিং মামলায় বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক এর চেয়ারম্যান লায়ন এম.কে খায়রুল বাসার সিআইডি’র ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম টীম কর্তৃক অটক। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনে চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনায় পাঁচজন গ্রেফতার আজওয়াহ হজ ট্রাভেলস আয়োজিত হাজিদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ১৫ বছরের সাংবাদিকতা নিয়ে তদন্ত হবে : উপদেষ্টার প্রেস সচিব প্রথমার্ধেই তুর্কমেনিস্তানের জালে ৭ গোল বাংলাদেশের মেয়েদের

নতুন যুগসন্ধিক্ষণে

প্রতিনিধির নাম :
  • আপডেট এর সময় : রবিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮
  • ৫৪ বার পঠিত হয়েছে

১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির জন্য সবচেয়ে গৌরবের দিন। এই দিন আমরা দীর্ঘ পরাধীনতার শেকল ছিঁড়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করেছি। যে আত্মগৌরব অর্জনের পথে আমাদের এই দীর্ঘযাত্রা- ঔপনিবেশিক অপশক্তির শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনার এই পথ ছিল দীর্ঘ সংগ্রামের, রক্তক্ষরণের। প্রায় দু’শতাব্দীর ব্রিটিশ উপনিবেশ এবং পাকিস্তানের ২৩ বছরের শাসন-শোষণ- এই সুদীর্ঘকালের পরাধীনতার নাগপাশ ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। বিশ্বে বাঙালি জাতির এক অদম্য বিজয়গাথা ঘোষিত হয়ে যায়।

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর আজকের এ বিজয় দিবসে আমরা যেন এক নতুন যুগসন্ধিক্ষণের সামনে দাঁড়িয়ে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে এবারের বিজয় দিবস আমার কাছে এবং বোধকরি দেশের সব নাগরিকের কাছেই অনেক বেশি গুরুত্ববহ হয়ে উঠেছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি। বাংলাদেশের মতো একটি রাষ্ট্রের জন্য স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়- কারণ আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ছিল একটি বিশেষ ঘটনা। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তান ভেঙে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের যে জন্ম, সেই জন্মসুতোর সঙ্গে গাঁথা ছিল অসাম্প্রদায়িকতা নির্ভর গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একটি স্বপ্ন। আমরা যেন ভুলে না যাই ১৯৭২ সালের সংবিধানের চারটি প্রধান স্তম্ভের কথা। গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র- এই চারটি স্তম্ভের ভিত্তিতেই গড়ে ওঠে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমার প্রত্যাশা থাকবে, আমরা যেন আমাদের ভিত্তিমূলের দিকে ফিরে যাই। সব মত, শ্রেণি, ধর্ম, লিঙ্গ, বর্ণ নির্বিশেষে নিজের রাষ্ট্রে মানুষ যাতে তার অধিকারের স্বাক্ষর রাখতে পারে। আগামী নির্বাচনে সেই অধিকার চাই।

কর্তৃত্ববাদী মনোভাব কখনই আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। আমাদের অবশ্যই পরমতসহিষ্ণু হতে হবে। প্রত্যেককে প্রত্যেকের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সেই জায়গা থেকে আগামী নির্বাচন যেন গণতান্ত্রিক সহনশীলতার একটা উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে- এবারের বিজয় দিবসে আমার সেটাই কামনা। দেশের জন্য আমার এই প্রার্থনা।

আরেকটি বিষয় আমাদের রাজনীতির ক্ষেত্রে গত কয়েক দশকে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তা হলো, মেধার চেয়ে অর্থের ভূমিকাই প্রধান হয়ে ওঠা। অর্থই যে সমাজ নিয়ন্ত্রণ করে, সে সমাজ মেধাহীন হয়ে পড়ে। রাজনীতিতে রাজনীতিবিদদেরই অংশগ্রহণ থাকার কথা, বুদ্ধিবৃত্তিক অংশগ্রহণ থাকার কথা বুদ্ধিজীবীদের। আমরা সেই অংশগ্রহণের জায়গাটি গত ৪৭ বছরে তৈরি করতে পারিনি। বরং যত দিন গড়িয়েছে রাজনীতিতে পেশি আর অর্থশক্তির গর্জনই তীব্র হয়ে উঠেছে। আমাদের গণতান্ত্রিক সহিষ্ণুতার সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিরও অনুশীলন করার প্রয়োজন আছে। আজকের নাগরিকরা, বিশেষ করে তারুণ্য রাজনীতিবিমুখ বলে অনেকে মনে করে। আমি তা মনে করি না। আমি মনে করি, মেধাবী তরুণরা রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়ে তখনই, যখন রাজনীতিতে বা সমাজে তাদের মেধার মূল্যায়ন থাকে না। সমাজে সে জায়গাটি তৈরি করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে সচেতন হতে হবে, যেন তরুণ মেধাবীরা তাদের সৃজনশীলতা নিয়ে দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অংশগ্রহণ করতে পারে। সে জায়গাটা একদিনে প্রতিষ্ঠা পায় না, সে জায়গা আমাদের তৈরি করে নিতে হবে। তার জন্য সবার আগে চাই সদিচ্ছা এবং অঙ্গীকার। আগামীতে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবেন, তারা যেন এই সৃজনশীল বুদ্ধিদীপ্ত তরুণ প্রজন্মকে সত্যিকারেই নিজেদের করে নিতে পারেন, এই আহ্বানও আমার থাকল।

লাখ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশ। আমরা যেন ভুলে না যাই, আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব রয়েছে দেশের জন্য। যার যার অবস্থান থেকে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য অবদান রাখতে হবে। এবং এই অবদান রাখার জন্য আমরা কেউই আমাদের নিজেদের দায় অস্বীকার করতে পারি না। নির্লিপ্ত থেকে কিংবা শরীর বাঁচিয়ে চলার মধ্যে কোনো সমাধান নেই। এ দেশ থেকেই পুষ্টি-শক্তি সংগ্রহ করে, বিদেশে নিরাপদ আশ্রয়ে নিজের সন্তান-সন্ততিকে রাখব, তারা সেখানে নিজেদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে- এত সহজ এবং পাশ কাটানো রাস্তাই যেন আমরা খুঁজে না ফিরি। আমাদের সবার দায় আছে এ দেশের প্রতি, প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের সে দায় পূরণের জন্য কাজ করার আছে। সেই দায়বোধ থেকেই আমাদের অংশগ্রহণ জরুরি। রাজনীতি-সচেতন হয়ে আমাদের যার যার জায়গা থেকে ভোট দিতে যাওয়াটাও জরুরি। এবং সেই ভোটটি এমন উপযুক্ত স্থানে দিতে হবে, যাতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অক্ষুণ্ণ থাকে এবং আমাদের রাষ্ট্রীয় চার নীতি ভূলুণ্ঠিত না হয়। পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ তৈরিই হয়েছিল সাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকে। অথচ যত দিন যাচ্ছে, আমাদের এ দেশে মাথাচাড়া দিচ্ছে জঙ্গিবাদ এবং ধর্মীয় হিংসা ও আক্রোশের বশবর্তী হয়ে একে অন্যের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ছি। রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্যও দিনের পর দিন ধর্মকে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাঙালি হয়ে বাঙালির বিরুদ্ধে আমরা দাঁড়িয়ে পড়ছি মিথ্যা হিংসার আগুনে পুড়ে। অথচ আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ কখনও ধর্ম দ্বারা গঠিত রাষ্ট্রের সদস্য থাকতে পারে না। সেই জায়গাটিতেও আমাদের বারবার ফিরে তাকাতে হবে। নিজেদের স্বার্থেই নিজেদের এগিয়ে আসতে হবে এই হিংসাকে নির্মূল করার জন্য। অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ একটা রাষ্ট্রব্যবস্থা তৈরির জন্য আমাদের সবার সচেতনতা ও অংশগ্রহণ জরুরি।

আমরা বলছি, আমাদের দেশ উন্নত হচ্ছে। দেশে প্রচুর স্থাপনা তৈরি হচ্ছে। দেশের উন্নয়নে নতুন এসব স্থাপনা যেমন জরুরি, শ্রেণিতে শ্রেণিতে ভেদাভেদ কমিয়ে আনাও তার চেয়ে অধিক জরুরি। একটি গোষ্ঠী কেবল মুনাফা লাভের মাধ্যমে অর্থে ও বিত্তে ফুলে-ফেঁপে উঠবে, আরেকটি গোষ্ঠী কেবল মাটিতে পড়ে থেকে থেকে ক্রমশ নিচের দিকে চলে যেতে থাকবে; এবং তাদের স্বপ্নই থাকবে কেবল কোনোমতে বেঁচে থাকা- এটিও কোনো যুক্তিগ্রাহ্য ও ন্যায্য মীমাংসা নয়। আমাদের যেটুকুই সম্পদ আছে, স্বপ্ন আছে- তার সুষম বণ্টন জরুরি। সেই সুষম বণ্টনের মাধ্যমে একটি শ্রেণিবৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থারই চূড়ান্ত আকাঙ্ক্ষা। সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে একটি গণতান্ত্রিক সংসদীয় ব্যবস্থা। আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী দল বৈষম্য কমিয়ে দেশকে অগ্রসর করবে। তার ভেতর দিয়েই আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বা আরও পরে ১০০ বছর পূর্তির উদযাপন করব অধিকতর উন্নত এক বাংলাদেশের বাস্তবতায়। বাংলাদেশ সেই স্বপ্নের দিকে তাকিয়ে আছে।

বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ যেন তার মৌলিক অধিকারগুলো জন্মলগ্নেই অর্জন করতে পারে, সেরকম একটি সুষম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এ বিজয় দিবসে এটাই আমার চাওয়া। এবং সে অর্জনগুলো নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেশের রাজনীতিবিদদের। তাদের আমরা নির্বাচিত করব আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে। নাগরিকদের দায়িত্ব সচেতন থেকে তার যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচন করা। সেই কাজটি আমাদের সঠিকভাবে সম্পাদন করতে হবে। তার ভেতর দিয়েই সুষম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পথে আমরা এগিয়ে যাব।

আপনার স্যোশাল মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © News Voice of Bangladesh
Theme Customized BY LatestNews