1. rajubdnews@gmail.com : admin :
  2. newsvob57@gmail.com : News VOB : News VOB
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
জুলাই অভ্যুত্থানের সাহসী নারীদের ইতিহাস থেকে হারিয়ে যেতে দেবো না: শারমীন মুরশিদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অপরাধীদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে: মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপি কমিশনার মানিলন্ডারিং মামলায় বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক এর চেয়ারম্যান লায়ন এম.কে খায়রুল বাসার সিআইডি’র ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম টীম কর্তৃক অটক। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনে চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনায় পাঁচজন গ্রেফতার আজওয়াহ হজ ট্রাভেলস আয়োজিত হাজিদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ১৫ বছরের সাংবাদিকতা নিয়ে তদন্ত হবে : উপদেষ্টার প্রেস সচিব প্রথমার্ধেই তুর্কমেনিস্তানের জালে ৭ গোল বাংলাদেশের মেয়েদের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী উপলক্ষে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ বিশেষ অভিযানে ছিনতাইকারী, মাদক কারবারিসহ ২৮ জনকে গ্রেফতার করেছে মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা পুলিশ ৪০ কেজি গাঁজা ও পিকআপসহ তিন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ডিবি

প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা – মুহাম্মদ আজিজুর রহমান (লেখক ও কলামিস্ট )

প্রতিনিধির নাম :
  • আপডেট এর সময় : সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০১৯
  • ৩৩৪ বার পঠিত হয়েছে

সরকার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে যাচ্ছে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে পাঁচ বছর মেয়াদী মহা পরিকল্পনা গ্রহন করা হবে। পরিকল্পনা মাফিক চলতি বছর জুলাই থেকে আগামী ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সারা দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও সমপর্যায়ের হবে বলে সরকার আশা করছে। প্রাথমিক শিক্ষাই হল শিক্ষার্থীদের আসল শিক্ষা তাই সঠিক ও বাস্তবমুখী শিক্ষা গ্রহন করে শিক্ষার্থীরা যেন শক্ত ভিতের উপর দাড়াতে পারে সরকার সেই পথেই হাটছে। প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত ১ লক্ষ ৬৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ , পাঠ্য সূচীতে পরিবর্তন , অবকাঠামো উন্নয়ন , শিক্ষকদের প্রশিক্ষন সহ নানা মূখী পরিকল্পনা গ্রহন করা হবে । ৩৫ হাজার শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষন, ৭২ হাজার ল্যাপটপ ক্রয়, আইসিটি প্রশিক্ষন, আইসিটি ল্যাব প্রতিষ্ঠা, কমপিউটার ক্রয়, মাল্টি মিডিয়া প্রশিক্ষন, প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড স্থাপন সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

বর্তমানে স্কুলে যাওয়ার মত বয়সের প্রায় ৬২ লক্ষ শিক্ষার্থী রয়ে গেছে পড়াশোনার বাইরে। এর মধ্যে প্রায় ৪৫ লক্ষ শিশু প্রাথমিকে পড়ার উপযুক্ত। এই বিশাল সংখ্যাক শিশুদের যে কোন উপায়ে পড়াশোনার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে । প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত করার চিন্তা ভাবনা অনেক দিনের , বিষয়টি যুগপযোগী নয় বলেই মনে করি। বৃটেন , আমেরিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রাথমিক শিক্ষা ষষ্ঠ শ্রেনী পর্যন্ত বলবত আছে। বর্তমান অবস্থায় ছেলে মেয়েদের যে সহশিক্ষা তা কোন মতেই পঞ্চম শ্রেনীর উপরে নেওয়া ঠিক হবে না। বর্তমানে পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা ছয়টি বিষয়ের উপর শিক্ষা অর্জন করে। প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের দৈহিক ও মানসিক দিক বিবেচনা করা পাঠ্যসুচী প্রনয়ন ও শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন । তাছাড়া নৈতিক শিক্ষার উপর শিক্ষার্থীদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

প্রাইমারী শিক্ষকদের মধ্যে প্রায় ৬০ ভাগ নারী । নারী শিক্ষকরা যে শুধু স্কুলে পাঠদান করে তা নয় বরং প্রতিটা নারীরই সংসার পরিচালনা করতে হয়। সেই সাথে তাদের সন্তানদের পড়াশোনার দিকটাও দেখতে হয়। একজন মা হল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শিক্ষক সেই মা ই যখন দিনের বেশীর ভাগ সময় বাইরে থাকে তখন ঐ সন্তানের উপর তার খানিকটা প্রভাব পরে। প্রাথমিক স্কুলের সময়সূচী নিয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। মাননীয় মন্ত্রী , শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। বিভিন্ন মহল থেকে প্রস্তাব আসছে। সবদিক বিবেচনা করে ১০টা থেকে বিকাল ৩-৩০ পর্যন্ত স্কুলের সময় নির্ধারন করলে ভালো হয়। ১টা থেকে ১-৩০ পর্যন্ত নামাজ ও দুপুরের খাবারের জন্য বিরতি। প্রাক প্রাথমিকের জন্য দেড় থেকে দুই ঘন্টাই যথেষ্ট। তাছাড়া যে সকল বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশী তারা দুই শিফটে ক্লাস করবে। যে সকল শিক্ষক দুই শিফটে ক্লাস করবে তাদের বেতনের বাইরে হিসাব করে পারিশ্রমিক দিতে হবে। অনেকে বাসা থেকে ১০ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে গিয়েও স্কুল করে । তাছাড়া বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সরকারী ছুটির দিনেও প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকদের স্কুলে যেতে হয় যা শুধু অমানবিকই নয় বরং চরম বৈষম্য । বিভিন্ন দিবসে দায়িত্ব পালনের জন্য স্কুল কতৃপক্ষই দুই জন শিক্ষককে ঠিক করে দিবেন যারা দায়িত্ব পালন করবে। পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করলেও সরকারের চাহিদা যেমন পুরন হবে তেমনি অন্য শিক্ষকরাও সরকারী ছুটি উপভোগ করতে পারবে।

ইদানিং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় সমন্বয় বদলির একটি আদেশ জারী করেছেন। ২০১৩ সালে রেজিষ্টার্ডকৃত প্রায় ২৬ হাজার ১৯৩ টি বিদ্যালয়কে সরকারীকরন করা হয়। এতদিন এ সব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অন্য কোন স্কুলে বদলি হতে পারতেন না । তাছাড়া সরকার মনে করছে পুরোনো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান নতুন সরকারী বিদ্যালয়ের চেয়ে ভালো। তাছাড়া শিক্ষকদের মানও নতুনদের চেয়ে ভালো তাই সরকার নতুন ও পুরোনো স্কুল গুলোর মধ্যে আপসের ভিত্তিতে সমন্বয় বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে করে নতুন প্রাথমিক স্কুল গুলোতে পড়াশোনার মান বাড়বে বলে সরকার মনে করছে। অন্য দিকে শিক্ষকরা মনে করছে নতুন স্কুলের শিক্ষকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন। ঢালাও বদলির ফলে ভালো স্কুলের মান কমে যেতে পারে তাই সরকারকে সবদিক বিবেচনা করে সমন্বয় বদলি করা প্রয়োজন বলে সাধারন শিক্ষকরা মনে করেন।

প্রাইমারি শিক্ষকরা তাদের বেতন কাঠামো নিয়ে অসন্তষ্টিত প্রকাশ করেছে। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক দশম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকরা বারো গ্রেডের বেতন পেয়ে থাকে। সরকার চিন্তা ভাবনা করছে প্রাথমিকে একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন করবে। সাধারন শিক্ষকরা মনে করছে প্রাথমিকে সহকারী প্রধান শিক্ষকের কোন প্রয়োজন নেই বরং সাধারন শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বারো থেকে এগারো গ্রেডে নিয়ে আসা উচিত। প্রধান শিক্ষক ও সিনিয়র শিক্ষকের মধ্যে বেতনের পার্থক্যে থাকবে এক ধাপ যা বর্তমানে দুই ধাপ আছে। সহকারী শিক্ষকদের রক্ত ও ঘামে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার ভিত তৈরি হচ্ছে যারা জাতিকে নেতৃত্ব দিবে, তাদের সেই পরিশ্রমের মূল্য অবশ্যই জাতিকে দিতে হবে। উন্নত সব দেশে শিক্ষকদের বেতন ও সম্মান সবচেয়ে বেশী তাই তারা সভ্য জাতি হিসেবে দাবি করে। শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন করে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি সম্ভব নয়। শিক্ষকদের ন্যায় সঙ্গত দাবীকে অবশ্যই পুরুন করতে হবে।

ইদানিং ঢালাও ভাবে শিক্ষকদের বিরুদ্বে বিভিন্ন অবিযোগ করা হচ্ছে। শিক্ষকদের স্কুলে ও ক্লাসে উপস্থিত হার কম , তাদের দায়িত্ব অবহেলার বিভিন্ন খবর পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ আপনাদের দায়িত্ব সচেতন ভাবে পালন করুন অন্য দিকে সরকারকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই মন্ত্রনালায় থেকে জেলা , উপজেলা সহ বিভিন্ন সেক্টরে যে অনিয়ম হচ্ছে তার খোজও একটু করুন। ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা লোপাট হয় , শেয়ার বাজার থেকে টাকা হাওয়া হয়ে যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা চুরি হয়, সোনার বার তামা হয়ে যায় ,নিয়োগ বানিজ্য, বদলি বানিজ্য হয় , খোদ কমিশনে অসৎ লোক ধরা পরে, এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে অনিয়ম হচ্ছে না আর আপনারা পরে আছেন শিক্ষকদের নিয়ে।

পরিশেষে একটা কথাই বলব শিক্ষা যেমন জাতির মেরুদন্ড তেমনি শিক্ষকরা হল তার কাড়িগর । বর্তমান বাংলাদেশে কেউ নীতি, নৈতিকতা ও প্রশ্নের উর্দ্ধে নয়। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও শিক্ষকরা তাদের নৈতিক দায়িত্ব পালন করে সুমহান পেশাকে গৌরবের জায়গায় ফিরিয়ে আনবেন সেই প্রত্যাশাই করি।

মুহাম্মদ আজিজুর রহমান

উপদেষ্টা সম্পাদক,নিউজ ৫২ বাংলা ডট কম

আপনার স্যোশাল মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © News Voice of Bangladesh
Theme Customized BY LatestNews