আনোয়ার হোসেন.নিজস্বপ্রতিনিধিঃ
আজ ১৭ই অক্টোবর বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৫ তম তিরোধান দিবস। এ উপলক্ষে সাঁইজীর আঁখড়াবাড়িতে বসেছে বাউল সাধুর হাট। এবছরে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে দিবসটি।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় তিনদিনব্যাপী আঁখড়াবাড়িতে রয়েছে নানা আয়োজন। এরই মধ্যেই ভক্ত, সাধু বাউল আর দর্শনার্থীতে মুখর হয়ে উঠেছে সাঁইজীর বারামখানা।
শুক্রবার (১৭ই অক্টোবর) সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
১৮৯০ সালের ১৭ই অক্টোবর (১২৯৭ সনের পহেলা কার্তিক) আধ্যাত্মিক সাধক ফকির লালন সাঁই দেহত্যাগ করেন। এরপর থেকেই তার স্বরণে ভক্ত-অনুসারীরা দিবসটি পালন করে থাকেন।
বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁই একজন মানবতাবাদী মানুষ ছিলেন। তার চেতনা ছিল ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সব প্রকার জাতিগত বিভেদের ঊর্ধ্বে। সেখানে ছিল মানবপ্রেম ও মানবতা। সাম্প্রদায়িকতা, সহিংসতা বা সংঘাত নয় বরং জাতপাতহীন মানব ধর্মের কথা বলেছেন এই সাধক। যার মুল সুর ছিল অসাম্প্রদায়িকতা। তার মানবতাবাদী গানগুলো এখনও দেশ এবং বিদেশের সঙ্গীতশিল্পীদের কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে।
এই স্মরণোৎসবে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আঁখড়াবাড়িতে ছুটে আসছেন লালন অনুসারী, সাধু-গুরু, বাউল ও ভক্তরা। ছোট দলে ভাগ হয়ে তারা গেয়ে চলেছেন লালনের গান। তারা বলছেন-এই দিনটি এগিয়ে আসলে বাড়িতে তাদের মন টেকে না। কখন সাঁইজির আঁখড়ায় আসবেন সেই স্বপ্নে বিভোর হয় মন। সাঁইজীকে সকল বির্তকের ঊর্ধ্বে রাখতে চান সাধু বাউলরা।
আঁখড়াবাড়িতে আসা বাউল রিদয় শাহ বলেন, ‘মানবতাবাদী মহান সংস্কারক মহাত্মা ফকির লালন সাঁইজী ছিলেন বাঙালি অসাম্প্রদায়িক ও মরমী চেতনার প্রাণপুরুষ। তার ধামে আমি নিয়মিত আসি। কালজয়ী মহাসাধক লালনের বানী আর সুরের গহীনে ডুব দিতে চাইলে ছেউড়িয়ায় আসতেই হবে।’
লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, ‘এবার বিশেষভাবে লালন তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করা হবে। লালন অনুসারিরা মনে করেন, লালনের অহিংসার বাণী বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে পারলেই কেবল সার্থক হবে সব আয়োজন।’