নিউস ভয়েস অফ বাংলাদেশ জালালুর রশদি খান: আজ শুক্রবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম(বার)।, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন গত ২৩ জুন ২০২৩ “জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া”র মাস্টারমাইন্ড ও সংগঠনের প্রধান শামিন মাহফুজকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতারের পর শারক্বিয়ার প্রশিক্ষণ, অস্ত্রগুলির উৎস, অর্থায়ন সম্পর্কে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শামিন মাহফুজকে গ্রেফতারের পূর্বে তার এর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ১। মোঃ ইয়াছিন (৪০) এবং অস্ত্র সরবরাহকারী ২। মোঃ কবির আহাম্মদ (৫০)-দ্বয়কে গত ০৮ জানুয়ারী ২০২৩ গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে, কুকি চিনের পাশাপাশি স্থানীয় কবির আহাম্মদ ও আব্দুর রহিম শারক্বিয়ার সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করে। সে কক্সবাজার ও বান্দরবান এলাকায় নও-মুসলিমদের নিয়ে কাজ করার আড়ালে “জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া” নামক সংগঠন গড়ে তুলে। নও-মুসলিমদের নিয়ে কাজ করার সময় স্থানীয় অস্ত্র সরবরাহকারী মোঃ কবির আহাম্মদ ও আব্দুর রহিম-কে সে সংগঠনের দাওয়াত দেয়। মোঃ কবির আহাম্মদ ও আব্দুর রহিম সংগঠনের হয়ে কাজ করতে রাজি হয় এবং অস্ত্র ও গুলি সরবরাহ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। শামিন মাহফুজ ও অস্ত্র সরবরাহকারী কবির গ্রেফতার হলে এবং পাহাড়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হলে আব্দুর রহিম ও তার সহযোগিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি টিম গত ১৫ মে ২০২৪ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উগ্রবাদী জঙ্গী সংগঠন “জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া”র অন্যতম শীর্ষস্থানীয় অস্ত্র সরবরাহকারীকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতের নামঃ ১। আব্দুর রহিম (৩২)। সে ২০১৯ সালের দিকে থেকে “রহিম ডাকাত” গ্রুপে নেতৃত্ব দিয়ে রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে, “জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া” কে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের নিমিত্তে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন বনে ড্রামের ভেতরে মাটির নিচে লুকিয়ে রেখেছে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের আভিযানিক দলটি বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানাধীন ছাগল খাইয়্যা এলাকার পাহাড়ের ঢালে ঘন জঙ্গলের মধ্যে মাটির নিচে রক্ষিত অবস্থায় নিম্ন লিখিত আগ্নেয়াস্ত্র, গুলিসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে।
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন বনে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা দুইটি ড্রামের ভেতর থেকে একটি ৭.৬৫ বিদেশি পিস্তল, চারটি দেশি তৈরি বন্দুক, তিনটি দেশি বারুদ ভর্তি অস্ত্র, একটি দেশি তৈরি ওয়ান শুটারগান, দেশি তৈরি একটি ধারালো অস্ত্র, ১৬ রাউন্ড গুলি, ১১টি কার্তুজ, ২৪টি শর্টগানের খোসা, দুইটি বাইনোকুলার, একটি গ্যাস মাস্ক, একটি মোবাইল সিগন্যাল বুস্টার, দুইটি ওয়াকিটকি, এসিড সদৃশ ছয় লিটার তরল পদার্থ, একটি চার্জার লাইট, একটি রিচার্জেবল ব্যাটারি, ৬০ ফুট ইলেকট্রিক তার, একটি তারসহ এন্টেনা, একটি হাতুড়ি, একটি করাত, ফ্রেমসহ একটি হেক্সো ব্লেড, চারটি ইলেকট্রিক বাল্ব ও হোল্ডার এবং একটি ত্রিপল উদ্ধার করা হয়
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র, ডাকাতি, অপহরণ, বনভুমি ধ্বংস ইত্যাদি অভিযোগে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজার জেলার রামু থানায় মোট ১২ টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
গ্রেফতারকৃতকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।