Newsvob.com.: অনলাইন ডেস্ক : জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন বিভিন্ন থেরাপি মেশিন এবং প্রতিবন্ধী শিশু ও ব্যক্তিদের জন্য সহায়ক উপকরণ যা কিনছে, সেগুলোকে ‘নিম্নমানের’ মনে করছেন গবেষকরা। তাঁরা বলেছেন, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের একাংশের পরিচিত ও আত্মীয়দের বাসা ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব ভাড়া করা কেন্দ্রের অবকাঠামো প্রতিবন্ধীবান্ধব নয়।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে ফাউন্ডেশনের একজন কর্মচারী বলেন প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন সহায়ক উপকরণ ক্রয়ে ব্যপক দূর্নীতি হয়।হুইলচেয়ার সহ সকল ধরনের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে।টেন্ডারে উল্লেখ থাকলেও সে ধরনের মালামাল ক্রয় হয় না। টেন্ডার পায়ে দেওয়ার জন্য একটা গ্রুপ কাজ করেন।এছাড়াও বিভিন্ন কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও ফাউন্ডেশনের কিছু কর্মকর্তা বিভিন্ন ভাউচারে মাধ্যমে অনৈতিক উপায়ে সরকারি টাকা উত্তোলন করে থাকেন, আর সে টাকার ৫০% ফাউন্ডেশনের কতিপয় কর্মকর্তা ভাগনেন। সোসাইটি নাম একটি বেসরকারি সংস্থা বিভিন্নধরনের মিটিং ও সমাবেশ করে থাকেন ওই অনৈতিক মুনাফা দিয়ে এমন তর্থ দেন।
এনজিওর অনুদানসংক্রান্ত অনিয়ম-দুর্নীতি :
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন শর্ত সাপেক্ষে বিভিন্ন এনজিওকে আর্থিক সাহায্য দিয়ে থাকে। সাহায্য প্রাপ্ত এনজিওগুলোর একাংশ ফাউন্ডেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশের মাধ্যমে অনুদান পেয়ে থাকে। অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ২০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা অর্থ আদায় করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে অর্থ দিতে হয় বিধায় এসব এনজিও অঙ্গীকারবদ্ধ সব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে না।
টিআইবির সুপারিশ : প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষায় দুর্নীতি নিরসনে মূল পাঁচটিসহ বেশ কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করেছে টিআইবি। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩-এর যথাযথ বাস্তবায়ন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা নীতিমালার আওতায় কমিটিগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনা, জাতীয় বাজেটে প্রতিবন্ধিতাসংশ্লিষ্ট খাতের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে আলাদাভাবে বরাদ্দ রাখা এবং চাহিদার নিরিখে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত বাজেট বাড়ানো, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য আলাদা ইউনিট করা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সেবা প্রদানকারী সব কার্যালয়ে কার্যকর তদারকি এবং অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে জবাবদিহিমূলক নিয়মিত পরীক্ষা নিশ্চিত করা। এ ছাড়া সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অন্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবন্ধিতাসংশ্লিষ্ট কার্যক্রম তদারকি করার কথাও বলেছে টিআইবি।
ওয়েবিনারে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা প্রতিবন্ধিতার উন্নয়ন সূচকে যে ধারণার কথা বলি, তা কিন্তু বাস্তবে আমাদের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য হচ্ছে না। তাঁরা উন্নয়নের অংশীদার হতে পারছেন না। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তাঁদের অংশগ্রহণ অনুকম্পার ওপর নির্ভর করে। অথচ তাঁরাও আমাদের মতোই সমান অধিকার পাবেন।’ তিনি আরো বলেন, এ অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে গেলে সরকারি সংস্থাগুলোর কার্যক্রম নিরীক্ষা করতে হবে; পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহিও নিশ্চিত করতে হবে।
গবেষণাটি করতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও তাদের পরিচর্যাকারী বা অভিভাবক, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও শাখা কার্যালয়, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, শারীরিক প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট, নিউরো ডেভেলপমেন্ট (এনডিডি) সুরক্ষা ট্রাস্ট, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, আদালত, প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন সময়ে ব্যবহৃত আশ্রয়কেন্দ্র, রাস্তাঘাট, গণপরিবহন, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে টিআইবি। সূত্র : ডিকেএস নিউস 24.কম