নিউস ভয়েস অফ বাংলাদেশ নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ সোমবার সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম-বার।
গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরে চলমান হরতাল অবরোধের অংশ হিসেবে দুর্বৃত্তরা গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের বনখড়িয়া এলাকায় রেল লাইন কেটে ফেললে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ০৭ টি বগি লাইনচ্যুত হলে ০১ জন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়। এই ঘটনার ফলে ২৬ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি’র ক্রাইম ইউনিটের স্পেশাল এ্যাকশন গ্রুপ উক্ত ঘটনায় জড়িত ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতিসহ ০২ জনকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনির আখরা কাঁচাবাজার এলাকা হতে গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ রাত রেল লাইন কাটায় ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি উদ্ধারসহ গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতদের নামঃ ১। মোঃ ইখতিয়ার রহমান কবির (৪৩) ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান যুবদল নেতা ও ২। মোঃ ইমন হোসেন (১৯) লালবাগ থানার ২৪নং ওয়ার্ড মহানগর ছাত্রদল সভাপতি।
উল্লেখ্য গত ২৮ অক্টোবরের পর হতে কয়েক দফায় হরতাল অবরোধ ও অগ্নিসংযোগের মত ঘটনার কারণে দূর পাল্লার গণপরিবহন কম চললেও রেলপথের কোন প্রভাব পরিলক্ষিত হয়নি।
এ দেশের সাধারণ জনগন রেলপথকে নিরাপদ বাহন হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এমতাবস্থায়, রেল লাইনে নাশকতা সৃষ্টি করে সাধারণ জনগনের মাঝে ভীতি সঞ্চার এবং ব্যাপক প্রাণনাশের পরিকল্পনা থেকে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ ইখতিয়ার রহমান কবির এর সাথে যোগাযোগ করে বলে দলীয় উচ্চ পর্যায় থেকে বড় কিছু করার চাপ আছে।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মোঃ ইখতিয়ার রহমান কবির আজিমুদ্দিন কলেজের সাবেক আহ্বায়ক তোহা ও গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম এর সাথে যোগাযোগ করে। পরিকল্পনা অনুসারে গ্যাসের সিলিন্ডার গাজীপুর থেকে আর রেল লাইন কাটার যাবতীয় সরঞ্জামাদি ঢাকা’র নবাবপুর মার্কেট হতে সংগ্রহ করে।
গত ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ তোহা ও মাসুম উক্ত সরঞ্জামাদি গাজীপুরে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইমনের কাছ থেকে নিয়ে যায়। একই দিনে কবির ও ইমন সন্ধ্যা কমলাপুর রেলস্টেশন হতে রওনা দিয়ে জয়দেবপুর রেল স্টেশনে পৌঁছায়। তোহা ও মাসুম একটি মাইক্রোবাসসহ স্টেশনের একটু সামনে থেকে কবির ও ইমনকে গাড়ীতে উঠায়। পরে তারা গাড়ী নিয়ে রেল লাইন কেটে নাশকতা ঘটানোর উদ্দেশ্যে পথিমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কয়েক জনকে গাড়ীতে উঠায়।
তারা রাতে শিমুলতলীতে হান্ডি রেস্টুরেন্টে খাবার খায়। দিবাগত রাত ০০:৩০ ঘটিকার সময় বনখড়িয়া এলাকায় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৪/৫ কি.মি দূরত্বে বনের পাশে গাড়ী রেখে, পায়ে হেটে তারা গ্যাস সিলিন্ডারসহ যাবতীয় সরঞ্জামাদি ঘটনাস্থলে পৌঁছিয়ে ০২ জনকে পাহাড়ায় রেখে বাকীদের সহায়তায় রাত অনুমান ০৩:০০ থেকে ০৪:০০ ঘটিকার মধ্যে ইমন রেল লাইন কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। কাজ শেষে গ্যাসের সিলিন্ডার ০২টি ওখানেই ফেলে বাকী সরঞ্জামাদিসহ তারা গাড়ীতে ফিরে আসে। ঘটনার ০২ দিন পরে কবির, ইমনকে ফোন দিয়ে চকবাজার এলাকায় সাক্ষাত করে তাকে ৩,০০০ (তিন হাজার) টাকা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যেতে বলে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান যুবদল নেতা মোঃ ইখতিয়ার রহমান কবির জানায় যে ঢাকার ডেমরা, যাত্রাবাড়ীসহ নিউ মার্কেট, এ্যালিফ্যান্ট রোড, বংশাল এলাকায় গাড়ীতে অগ্নি সংযোগের নির্দেশদাতা ও মূল পরিকল্পনাকারী। সে উল্লেখিত এলাকায় অগ্নি সংযোগের পরিকল্পনা, নির্দেশ ও অর্থ প্রদান করেছে এমন ০৮টি ঘটনার দায় স্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য যে, বংশাল থানা এলাকায় বাসে অগ্নি সংযোগের চেষ্টাকালে হাতেনাতে ধৃত আসামী মোঃ জামাল হোসেনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেও ইখতিয়ার রহমান কবিরের নাম এসেছে।
ধৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
J.Rashid