Newsvob.com.: অনলাইন ডেস্ক : তাসনিম খলিল তাঁর নাম হলেও ‘গুজব গুরু’ হিসেবেও ইতোমধ্যেই আলাদা পরিচিতি পেয়েছেন। বিদেশে বসে অনলাইনে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে সামরিক বাহিনী, আইন-আদালতসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়ে কূটকৌশলই তাঁর প্রধান নেশা।
নিজের এ লক্ষ্যপূরণে সহযোগী হিসেবে পাশে পেয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনের জামাতা ও যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবী ডেভিড বার্গম্যানকে।
দিনে দিনে আদর্শিক বিএনপি-জামায়াতের সব আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ায় সহজ পন্থা হিসেবে অসত্য মিথ্যাচারকেই নিজেদের প্রধান হাতিয়ার করেছেন।
আবার এগুলোই নিজেদের ভূইফোঁড় অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘নেত্র নিউজ’র প্রধান খোরাকও বটে!
এমন বাটপাড়ির রেইসে ‘করিৎকর্মা’ হিসেবেই ক্রমশ নিজেদের মেলে ধরে যুক্তরাজ্যে পলাতক ও দন্ডিত বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সর্বোচ্চ আস্থাও কুড়িয়েছেন।
চক্রটির গুজব আর ষড়যন্ত্রের অব্যাহত পরিকল্পনার ‘মাস্টার মাইন্ড’ হিসেবে পর্দার আড়ালে যথারীতি কলকাঠি নাড়ছেন।
শুধু কী তাই? ‘পুতুল’ বানিয়ে অদৃশ্য সুতোতে তাসনিম, বার্গম্যান গংদের নিয়মিত নাচিয়েও চলছেন।
এ যাত্রায় ‘ঘোষণা’ দিয়ে প্রকাশ্যেই ওরা ফ্রিডম পার্টির কিলারদের পক্ষ নিয়েছেন! সাফাই গেয়েছেন ফ্রিডম পার্টির মোহম্মদপুর-ধানমন্ডি থানার সমন্বয়ক মোস্তফিজুর রহমান মোস্তফারও।
নিজেদের এ অবস্থান খোলাসা করতে গিয়েই জনসম্মুখে উন্মোচিত হয়েছে ‘মুখোশ’।
আর এতেই তাদের ‘গলার কাঁটা’ হয়ে বিঁধছেন নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের কর্মী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ জোসেফ।
কেবল জোসেফই নন তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও ‘টার্গেট’ করে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রটি নির্জলা মিথ্যাচার করে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বিভিন্ন সূত্রের অভিযোগ, ভূতের মুখে রামনামের মতোই অনলাইন নিউজপোর্টাল নেত্র নিউজের এডিটর (!) তাসনিম খলিলের।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা থেকে বাঁচতে নিজে দেশ থেকে পালিয়ে আয়েশী জীবনকে বেছে নিলেও আইনের মুখোমুখি হবার নৈতিক সাহস নেই তাঁর।
সূত্রগুলো বলছে, ফ্রিডম পার্টির নেতা ডাকাত মোস্তফা নিজের দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে প্রাণ হারালেও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে হাওয়া ভবনের নির্দেশে জোসেফকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে ২০০৪ সালে মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল ঢাকার জজ আদালত।
এরপর রাষ্ট্রপতি ২০১৮ সালের মে মাসের শেষের দিকে তাকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। ২২ বছরের অন্ধকার কারা বন্দী জীবনের অবসান ঘটে জোসেফের।
ন্যায় বিচার পাওয়া জোসেফের সহোদর বড় ভাই, মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের ভিপি সাঈদ আহমেদ টিপুকেও হত্যা করেছিল বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুক-রশিদের ফ্রিডম পার্টির চিহ্নিত কিলাররা।
কোন্দলে প্রাণ হারানো মোস্তফার বড় ভাই হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান ক্যাসিনো কেলেঙ্কারীতে ধরা খেয়ে এখনও কারাগারে রয়েছেন।
জানা যায়, বন্দিদশা থেকে মুক্তির পর জোসেফ পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলেও বিএনপি-জামায়াতের গুজব সেলের ‘পেইড কর্মী’ তাসনিম খলিলরা প্রচার করছেন তিনি না কী ছদ্মনাম-পরিচয় ব্যবহার করছেন!
নিজেরাই তানভীর আহমেদ তানজিল নাম দিয়ে ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম সনদ তৈরি করে জোসেফের নামে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করছেন।
সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যমে তাসনিম খলিল গংদের এমন গুজবে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষজন।
‘আদতে গোয়েবলসীয় কায়দায় অপপ্রচারে পাক্কা জহুরি তাসনিমের দেশে ফিরে আইনের মুখোমুখি হওয়ার সৎ সাহস নেই।
অথচ একটি মামলাও না থাকা জোসেফের পরিচয় বদলের আজগুবি তত্ত্ব উপস্থাপন করে রিজভীর মতোই আবোল-তাবোল স্টাইলে বাহাস করে জাতে ওঠতে চাচ্ছেন তাসনিম খলিল। কিন্তু এই চক্রান্ত শেষ পর্যন্ত হালে পানি পায়নি।’
দেখা গেছে, তাসনিম খলিলের নামসর্বস্ব অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে তোফায়েল আহমেদ জোসেফের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
সংক্ষুব্ধরা বলছেন, মি: মাহাথিরের সঙ্গে জোসেফের ছবিটিও ফটোশপের কারসাজি। এক ভিনদেশির মুখায়বে জোসেফের মুখ চতুরতার সঙ্গেই বসানো হয়েছে। ফটোশপ মানেই হচ্ছে একজনো মাথা কেটে অন্য জনের মাথা এডিট করা। এটা একটা ফটোশপের খেলা। কাউকে ফাশাতে হলে এভাবে ফাশায়।
তবে প্রতারক চক্র ফায়দা লুটতে মার্কিন মুল্লুকের ডোনাল্ড ট্রাম্প কিংবা রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও যদি একই কায়দায় জোসেফের ছবি মিলিয়ে দিতো তাহলেও অবাক হবার কিছুই ছিল না। হরহামেশাই এমন ফটোশপের প্রতারণা ঘটছে।’
ফটোশপ কারসাজির মাধ্যমে এমন সব ‘ভূয়া ছবি’ তৈরি করা চক্রকে একহাত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একজন লিখেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে হাওয়া ভবনকে ‘খাওয়া ভবন’ বানিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক। কেউ কেউ তাকে ‘দুর্নীতির বরপুত্র’ নামে ডাকতে শুরু করেন।’হাওয়া ভবনের টিফিনকারি বহন সালমান তালিব হয়ে যায় কোটি পতি।
জোসেফকে ‘গ্যাংষ্টার’ বলায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে আরেকজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের নৃশংসতম সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটিয়েছিলেন তারেক।
এ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত তারেক ‘পলাতক’ রয়েছেন। তার মা খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে জেল খেটেছেন।
নিজেদের দিকে না তাকিয়ে জোসেফকে গ্যাংষ্টার বানানোর ষড়যন্ত্রের গল্প পাঁতানো হয়েছে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করতেই।
গাঁজার পাহাড়েই যে গুজবের ডালপালা বিস্তার করে অসুস্থ গুজব আর মিথ্যাচার করে ‘অর্বাচীন’ তাসনিম খলিল-ডেভিড বার্গম্যানরা সেই প্রমাণই দিয়েছেন আরও একবার।’
বিএনপি-জামায়াত চক্রের ‘প্ল্যান্ট’ করা বা ‘ফরমায়েশি’ ও মনগড়া স্ক্রিপ্ট প্রস্তুত করে উল্টো নীতির বুলি আওড়ানো তাসনিম খলিলের উদ্দ্যেশ্যে জোবায়ের হোসেন নামে একজন ফেসবুকে কয়েকটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘মিথ্যা মামলায় ২২ বছর কারারুদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী জোসেফকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ন্যায় বিচারকে কটুক্তি করছেন।
অথচ ১৯৭৪ সালের ৪ এপ্রিল ঢাবির মুহসীন হলে সংঘটিত সেভেন মার্ডারের অন্যতম ফাঁসির আসামি জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রয়াত সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের ফাঁসির দণ্ডাদেশ মওকুফ করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
সেদিন কোথায় ছিলেন উর্বর মস্তিষ্কের তাসনিম খলিলরা?
সূত্রাপুরের দুই ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে পলাতক অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড পেয়েছিলেন সুইডেন বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিন ঝিন্টু। গ্রেফতার না হয়ে বিদেশেই ‘পলাতক’ ছিলেন পুরো সময়।
বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে ঝিন্টু তৎকালীন আইনমন্ত্রী মওদুদ ফর্মুলায় ২০০৫ সালের ৩ জানুয়ারি দেশে এসে আত্মসমর্পণ করেন।
মাত্র ১০ দিন কারাগারে থাকার পর ওই বছরের ১৩ জানুয়ারি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের ক্ষমায় কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।