Newsvob.com আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ রাজ্যটিতে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর এই দুই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
এদিন বিক্ষোভকারীরা গুয়াহাটি এয়ারপোর্টে আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে আটকে রাখেন। তবে তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মী তাকে নিরাপদে এখান থেকে নিয়ে যান।
অবাক করা ব্যাপার হলো কোনও রাজনৈতিক দল বা ছাত্র সংগঠন এই বিক্ষোভের ডাক দেয়নি। কিন্তু এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।
গুয়াহাটির বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়া বিক্ষোভকারীদের ওপর ব্ল্যাংক শট, টিয়ার গ্যাস শেল ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এসব বিক্ষোভকারীর বেশির ভাগই শিক্ষার্থী।
কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী রাজ্যটির রাজধানী দিসপুরে যাওয়ার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর বাধার মুখে পড়ে। ছাত্রনেতাদের মতে, সেক্রেটারিয়েটের সামনে অনেক বিক্ষোভকারীকে আহত করেছে পুলিশ।
আসামে পরিস্থিতি যেন ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়েন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোওয়াল। গুয়াহাটির বিজেপি সাংসদ কুইন ওঝার বাড়িতেও ভাঙচুর চালিয়ে বাড়ির উঠোনেই তাঁর কুশপুত্তলিকা পোড়ায় জনতা। নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এই বিলের প্রতিবাদে ধর্মঘট ডেকেছে। মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে একটি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সনোওয়াল। কিন্তু তাঁর কনভয়ের সামনে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আশঙ্কায় তাঁর যাত্রা পথ বদলাতে হয়েছে।
উত্তর ত্রিপুরার ধলাই জেলার মনুঘাট এবং ৮২ মাইল বাজারে একের পর এক দোকানে আগুন লাগায় প্রতিবাদকারীরা। ভাঙচুর করে লুটপাট চালানো হয়। তাঁদের আক্রমণে কৃপাসিন্ধু চক্রবর্তী নামে এক ব্যবসায়ী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আগরতলা শহরের উত্তর গেট এলাকায় বিক্ষোভে নামের ধর্মঘটের সমর্থকরা।
পুলিশ শতাধিক অবরোধকারীকে গ্রেফতার করেছে। একই সঙ্গে গুজব ঠেকাতে ত্রিপুরায় মোবাইল ইন্টারনেট এবং এসএমএস পরিষেবা আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। দক্ষিণ ত্রিপুরার সিপাহিজলায় বিক্ষোভে দু’বছর বয়সী একটি শিশু আহত হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়।
উত্তর ত্রিপুরা, ধলাই ও পশ্চিম ত্রিপুরার জনজাতি (স্থানীয় অধিবাসী) অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে যেতে পারে, তার আশঙ্কা করেছিলেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। সোমবারই সংসদে ওই বিল পেশের সময় তিনি বারবার সতর্ক থাকার কথা জানিয়েছিলেন। সে সময় তিনি জানান, স্থানীয় মানুষেরই স্বার্থ দেখা হবে, তাই এই বিক্ষোভ দেখানোর কোনও প্রয়োজন নেই। অবিলম্বে বিক্ষোভের পথে ছেড়ে বেরিয়ে আসারও আবেদন করেন তিনি। কিন্তু অমিত শাহকে যে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে তা এ বিক্ষোভ থেকেই স্পষ্ট।