Newsvob.com.: বিপদকে মোকাবিলা করেই বেঁচে থাকার নাম জীবন। বাংলাদেশের মানুষ সেভাবেই বাঁচতে শিখেছে। বেঁচে আসছে। বেতের চারিত্রিক বৈশিষ্ট নিয়েই তাদের পথ চলা। এরা মচকে যায় কিন্তু ভাঙে না। অন্তত ইতিহাস সে কথাই বলে। এ দেশের মানুষ প্রতিবারের ন্যায় বন্যাকে মোকাবিলা করে আবার ঘুরে দাঁড়াবে—এ কথা বেশ জোর দিয়েই বলা যায়। পাশাপাশি এ কথাও বলতে হয়, সরকার পাশে থাকলে বিষয়টি অনেক সহজতর হয়ে ওঠে। অতীতে সরকার তার সাধ্যমতো সহযোগিতাসহ এগিয়ে এসেছে, এবারও তার ব্যত্যয় ঘটবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস। বন্যার প্রতি সরকারের সতর্ক দৃষ্টি তার সাক্ষ্য বহন করে।একদিকে করোনা। উপসর্গ হিসেবে নতুন করে যুক্ত হয়েছে বন্যা। যদিও বন্যা দেশে অনেকটা রুটিনমাফিক যাতায়াত করে। এত দিন এটি অনেকটা গা-সওয়া অবস্থায় ছিল। কিন্তু এবার যেন তা হওয়ার নয়। করোনার আগ্রাসনে ইতোমধ্যেই অনেকটা বিপদগ্রস্ত। এখনো করোনা থেকে মুক্ত নই। স্বল্প সময়ের মধ্যে মুক্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনাও নেই। করোনা এখন বিশ্ব বিপর্যয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। বিশ্ব অর্থনীতির মেরুদন্ডে আঘাত করেছে এই করোনা। সেই আঘাতের ঢেউ এসে আছড়ে পড়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ এখন দ্বিমুখী দুর্যোগের মোকাবিলা করছে। একদিকে করোনা বিপরীতে বন্যা। আর সে কারণেই বাংলাদেশকে দাঁড়াতে হবে ইস্পাত কঠিন মেরুদন্ডের ওপর। প্রয়োজন সর্বজনীন ঐক্যের।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে। যমুনার সমতলে স্থিতিশীল। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রক্ষপুত্র ও যমুনার পানি সমতলে অব্যাহতভাবে হ্রাস পেতে পারে। গঙ্গা ও পদ্মা নদীসমূহের পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে; যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। কুশিয়ারা ব্যতীত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীসমূহের পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে; যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। একই সময়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, নাটোর, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। অন্যদিকে মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকা জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
এ ছিল বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য। এখন চলছে ভরা বর্ষা মৌসুম। যদি অতিরিক্ত বর্ষা বা ভারী বৃষ্টির কবলে না পড়ি; তাহলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কম। এ ছাড়াও রয়েছে ওপর থেকে নেমে আসা পানির চাপ। চাপ বাড়লে বন্যার চিত্র পাল্টে যাওয়ার সম্ভাবনাও কম নয়। এজন্য আগাম প্রস্তুত থাকার প্রয়োজন রয়েছে। তবে করোনা যে ক্ষত সৃষ্টি করেছে তাকে মোকাবিলা করা আসলেই বেশ কঠিন। সেই কঠিনকে আরো একটু কঠিন করে তুলেছে বন্যা পরিস্থিতি। জাতির যেকোনো কঠিন দুর্যোগ মোকাবিলা করার দায়িত্ব সরকারের একার নয়। দায়িত্ব দেশের প্রত্যেক নাগরিকের ওপরেও বর্তায়। এ দুর্যোগ মোকাবিলায় সবাইকে এক কাতারে দাঁড়াতে হবে। একের বোঝাকে দশের লাঠিতে পরিণত করতে হবে ।